শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলুক এখনই

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলুক

করোনাজনিত লকডাউনে আর সব কিছুর সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। আজ কিছুদিন হলো অবস্থা অনেক স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে। চালু হয়েছে ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন। কিন্তু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেই। অনলাইন শিক্ষা এদেশে সম্পূর্ণ ব্যর্থ প্রমানিত হয়েছে। এর পিছনে ষড়যন্ত্রের আভাস রয়েছে এমনটা অনেকে ভাবছেন।

                ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে “বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্র”, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বিশেষত স্কুল গুলিতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পঠন পাঠন চালু করার দাবি করছে। ১৩ ই আগস্ট প. ব .সরকারের শিক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর কাছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খোলার দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। গত জুলাই মাসে থেকে কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলাতে এলাকাভিত্তিক জনমত তৈরি, প্রচার ও শিক্ষক সংগঠন এবং গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলির সঙ্গে মত- বিনিময় ধারাবাহিক ভাবে চলছে। গত ৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২১ এ কলকাতার কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে প্রচার ও গণ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। জেলার প্রচার কর্মসূচিগুলিতেও বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে। এই কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য- বিধি মেনে পঠন পাঠন চালু করা এবং জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০২০ বাতিলের দাবিতে  ২৮ শে জানুয়ারি, দুপুর একটায় মুক্তাঙ্গন, রাসবিহারী মোড়- এ “বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্র” র আহ্বানে একটি গণকনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এইসব প্রচার কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা একটি প্রচারপত্র প্রকাশ করি, যা সরাসরি এখানে তুলে দেওয়া হলো।

               দিন, সপ্তাহ, মাস পেরোল।

         সূর্য দক্ষিণায়ন ছেড়ে, উত্তরায়ণ ছুঁল।

                পুরোনো বছর গড়িয়ে গেল।

                  নতুন বছরের গন্ধ মেখে,

                            নতুন বই এল।

            শুধু স্কুলে যাওয়ার আনন্দটাই এল না।

দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী যাদের কলকাকলিতে মুখর থাকত সমস্ত শিক্ষাঙ্গন– তারা দীর্ঘ দশ মাস গৃহবন্দী। তাদের স্কুল নেই, কলেজ নেই, টিউশন নেই, নেই কোচিং ক্লাস। আছে শুধু একঘেয়ে বিরক্তি। মাসে মাসে স্কুল থেকে পাওয়া Activity Task, চাল, আলু, ছোলা, সস্তার স্যানিটাইজার, মাস্ক।

কবে খুলবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান? কী হবে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ? এ প্রশ্ন আমার, আপনার, সবার। উত্তর? জানা নেই।

কমপ্লীট লকডাউন থেকে আনলক -৯ হয়ে গেল। খুলে গেল হাট-বাজার, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, মায় সিনেমা হল পর্যন্ত। রেলের চাকা ঘুরল। খুলল না শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর এই সুযোগেই কত শিশুর শৈশব ঝড়ে গেল। কত নাবালিকা মেয়ের বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ের নামে পাচার হয়ে গেল কতজন। কতজন মা-বাবার হাতের কাজের সাহায্যকারী হল। কতজন ভিন রাজ্যে অসংগঠিত ক্ষেত্রে অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে কাজে যোগ দিতে চলে গেল।

বিদ্যালয়গুলিকে শিক্ষা দপ্তর অনলাইন শিক্ষার নিদান দিয়ে, ফেলা থুতু গিলতে বাধ্য হয়েছে। বিদ্যালয়গুলি এই নির্দেশ পালন করতে উদ্যোগী হয়েছিলো। কিন্তু সফলতা পায় নি। সফলতা পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ সরকার- পোষিত বিদ্যালয়গুলি (কিছু নামকরা স্কুল বাদ দিলে)-র বেশিরভাগ পড়ুয়া প্রথম প্রজন্মের এবং নিম্নবিত্ত পরিবারের। তাদের অনেকের বাড়িতে স্মার্টফোন নেই। নেই কম্পিউটার। প্রত্যন্ত এলাকা গুলিতে নেটওয়ার্ক কানেকশন বেশ দূর্বল। তাছাড়া অনলাইন শিক্ষাও ব্যয়বহুল। এই ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা বহু পরিবারের নেই। অনলাইন শিক্ষা চালু করতে গিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামো বে-আব্রু হয়ে পড়েছে। দেশ-বিদেশে মুখ পুড়েছে জনদরদী (!!!) সরকারের।

যে দেশের শিক্ষার্থীদের অপুষ্টির ঘাটতি মেটাতে, একবেলা পরিপূর্ণ আহার নিশ্চিত করতে, মিড-ডে মিল এর ব্যবস্থা করতে হয়। সে দেশে অনলাইন শিক্ষা সোনার পাথর বাটি। দেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে শিক্ষাঙ্গনে আনতে আমাদের বহু বছর সময় লেগেছে। পরিকাঠামো রচনা ক’রে, অনলাইন শিক্ষা চালু করলেও প্রথম প্রজন্মের বহু পড়ুয়া শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। তারা শিখতে পারবে না। পিছিয়ে পড়বে। শ্রেণিকক্ষে বসে যে পাঠদান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পারস্পরিক বোঝাপড়ায় যে পাঠদান, তা অনলাইন শিক্ষা কখনোই পূরণ করতে পারবে না। তাছাড়া বিদ্যালয় শুধুমাত্র শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটায় না। তার চারিত্রিক ও মানসিক বিকাশও ঘটায়। শেখায় সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সমানুভূতি ও মানবিকতা বোধ। এক শ্রেণি কক্ষে বসে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা, ঝগড়া-মারামারি, খুনসুটির মধ্যেও তারা জীবনের অনাবিল আনন্দ খুঁজে পায়। জীবন-যুদ্ধে লড়তে শেখে। দায়িত্ব, কর্ম-ভার পালন করতে সক্ষম হয়। সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলী শিক্ষার্থীর শারীরিক বিকাশ ঘটায়। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে সরিয়ে রেখে আমরা কী তাদের মনোবল ভেঙ্গে দিচ্ছি না?

প্রশ্ন করুন আপনার সন্তানকে, আপনার প্রতিবেশীর সন্তানকে। দেখুন তারা কেউ বাড়িতে থাকতে চায় না। তারা বেরোতে চায়। বন্ধুদের সাহচর্য পেতে চায়।

আমরাও চাই –শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাক। স্কুল খোলার দাবি জানিয়ে আমরা শিক্ষামন্ত্রী কে স্মারকলিপি দিয়েছি। আবেদন করেছি শিক্ষক-শিক্ষার্থী হাজিরা পর্যায় ক্রমিক (Roster) করে পঠন-পাঠন চালু করা হোক। সর্বশিক্ষা অভিযান এর কল্যাণে বিদ্যালয় গুলিতে শ্রেণি কক্ষের অভাব নেই। স্বাস্থ্য বিধি মেনে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর হাজিরা পর্যায় ক্রমিক ( roster) ক’রে (সেই roster সংশ্লিষ্ট স্কুল গুলো করবে) শ্রেণি কক্ষে স্বাভাবিক পঠন-পাঠন চালু করা হোক। এই দাবির বিপরীতে কেউ কেউ দাবি তুলবেন, এক সর্বজন মান্য বৈদ্যুতিন মাধ্যম দাবি তুলেছেন, শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাতের কথা মনে করিয়েছেন। ২০০৯ সালের RTE Act অনুযায়ী সব স্কুলে ৪০:১ শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত হওয়া উচিৎ ছিল। এগারো বছরে তা হলো না কেন? এ দায় কার?

উন্নয়নের নামে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ হচ্ছে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো-করিডোর হচ্ছে, শপিং-মল, শপিং কমপ্লেক্স হচ্ছে। যুদ্ধ-যুদ্ধ জিগির তুলে আধুনিক সব সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে। এগুলো কি শিক্ষার থেকে বেশি জরুরী? শিক্ষা-স্বাস্থ্যে জিডিপি-র কতটুকু ব্যয় হয় জানেন? কেন এত সামান্য অর্থ ব্যয় হচ্ছে?

এ নিয়ে আমরা কেউ প্রশ্ন তুলছি না। শুধু বলছি স্কুল খোলা যাবে না। খুললেই হু হু ক’রে সংক্রমণ ছড়াবে। “জান হ্যায় তো, জাহান হ্যায়”–এই শঠতা পূর্ণ বাক্য উচ্চারণ করছি। বলছি না, এই ‘জাহানে’, এ শুধু ‘জান’ নিয়ে বেঁচে থাকাকে মানুষ বলে না। কেন বলছি না ‘মান’ আর ‘হুঁশ’ এর কথা। আসলে আমরা অনেকেই সচেতন ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছি ‘মান’ আর

 ‘হুঁশ’ এর প্রসঙ্গ। ‘হুঁশ’ হলে যে রাজার দড়িতে টান পড়বে। ‘মান’ নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষ যে মানবতার লাঞ্ছনায় গর্জে উঠবে।

             জানি আপনারা উদাহরণ দেবেন- যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান খুলে ছিল সেখানে একদিনে এত সংক্রমণ ছড়িয়েছে যে, বন্ধ ক’রে দিতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু হিসেব রেখেছেন কি কতজনের অবস্থা সঙ্কটজনক হয়েছে? অন্যান্য রোগ কি হয় না? দেখলেন তো রোগের মোকাবিলাতেও সরকার ল্যাজে-গোবরে। থালা-ঘটি বাজিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে দায় সেরেছে। মেলা-খেলা, উৎসব-অনুষ্ঠান, পূজা-পার্বণ, দ্বারোদ্ঘাটন, শিলান্যাস, রাজনৈতিক সমাবেশ কিছুই বাদ নেই। তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন? সব করোনা ভাইরাস কি স্কুল ঘরে বন্ধ আছে?

ভাবুন, ভাবুন, ভাবা প্রাকটিস করুন। কোনো অজুহাতে এগুলো বন্ধ রাখা হয়নি তো? আপনারা জানেন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ পাশ হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী তা লাগু করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। জানেন এতে কী আছে? আসুন এক ঝলক দেখে নিই— নতুন শিক্ষা নীতি অনুযায়ী সমগ্ৰ শিক্ষা অভিযান এর মূল ট্যাগ লাইন- ‘সবার শিক্ষা সবার উন্নতি’ বাতিল। জোর বৃত্তিমূলক শিক্ষায়। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বৃত্তিমূলক পাঠক্রম। সেই পাঠক্রমের ব্যবহারিক প্রয়োগ করতে গিয়ে শিশু মা-বাবার কাজের সহায়ক হবে। একদিকে যেমন চাষার ছেলে চাষা হবে, কামারের ছেলে কামার। অন্যদিকে আইনের তোয়াক্কা না করে ঢালাও শিশু শ্রমিক তৈরি হবে। ছাত্রদের জন্য ক্রেডিট ব্যাঙ্ক চালু। পয়সা জমা রেখে পড়তে হবে। ফেলো কড়ি ,মাখো তেল ব্যবস্থা। পকেটে যার পয়সা আছে, ডিগ্ৰী সার্টিফিকেট শুধু তার জন্যই।

         বর্তমানে দেশে ৮০০ বিশ্ব-বিদ্যালয় ও ৪০,০০০ কলেজ আছে। কমে ১৫,০০০ হবে। ঐ কলেজ

গুলোকেও স্বশাসিত ইউনিভার্সিটি হতে হবে। নিজেদের খরচাপাতি নিজেদেরই চালাতে হবে। ঢালাও সার্টিফিকেট বিক্রির ব্যবস্থা পাকা।

৫+৩+৩+৪ এই চার ধাপে পড়াশোনা হবে। দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রথম বড় পরীক্ষা। নবম শ্রেণিতে কলা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ভাগ। অর্থাৎ নবম শ্রেণি থেকেই গণিত, বিজ্ঞান বাদ।

শিক্ষার্থীদের কলেজ, বিশ্ব-বিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। NEET অর্থাৎ ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট এর ধাঁচে পরীক্ষা নেওয়া হবে ভর্তির জন্য। বলা বাহুল্য, তাতে প্রশ্ন হবে হিন্দী-ইংরেজি তে। কে সুযোগ পাবে? আমার আপনার বাড়ির ছেলে? পেলেও বাড়ির পাশের কলেজ, বিশ্ব-বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে? দূরে যেতে হবে। পকেটে রেস্ত থাকলে হবে, নচেৎ নয়।

ত্রিভাষা শিক্ষার নামে সংস্কৃত শিক্ষা বাধ্যতামূলক হবে। সংস্কৃত ভাষায় কামশাস্ত্রে বর্ণিত ৬৪ টি আর্ট/কলা শেখানো হবে। তার মধ্যে গৃহসজ্জা, অঙ্গসজ্জা, গৃহকর্ম, সুগৃহিণী হওয়ার পাঠ থাকবে। এই পাঠ কারা নেবে? অবশ্যই মেয়েরা। মেয়েদের বাইরের কাজে প্রয়োজন নেই। তাই এই শিক্ষানীতির ইংরেজি খসড়া শুরুই হয়েছে He দিয়ে। কোথাও student, pupil বা learner শব্দের উল্লেখ নেই। গার্গী, মৈত্রেয়ী, অপালা, লোপামুদ্রা দের দেশে এ কি নিদারুণ পরিহাস!!!

সাথী,

লকডাউন সময়কালের একটা পরিসংখ্যান:

১) নাবালিকা বিয়ের হার-— ১৬%

২) আঠারো বছরের আগে বিয়ে –৪৮%

৩) ড্রপ আউট ১৯%

৪) অপুষ্টির শিকার প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন

৫) অঙ্গন ওয়াড়ী কেন্দ্র বন্ধ থাকার জন্য মা ও শিশুরা খাদ্য পায়নি ১৭০০০ টন

৬) শিশু শ্রমিক হয়েছে-অসংখ্য

তাই মহামান্য সরকার (!!!) অতিমারী কে হাতিয়ার করে ২০১৮-২০১৯ সালের সমগ্ৰ শিক্ষা অভিযান’কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নয়া শিক্ষা নীতি চালু করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি– দেশের স্বার্থে অবিলম্বে এই শিক্ষা নীতির প্রয়োগ দরকার। সত্যিই কী দেশের স্বার্থে? নাকি “সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট” এর মতো “এডুকেশন ফর দ্য রিচেস্ট” এর জন্য।

           সরকারের উদ্দেশ্য কী? অনলাইন শিক্ষার নামে পুঁজিপতিদের মুনাফা বাড়ানো? আমাদের দেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত ক’রে সমাজকে মধ্যযুগীয় অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া? ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র জানে – ‘মানুষ যত জানে, তত কম মানে’ । তাই অনলাইন শিক্ষার নামে, সংস্কারের নামে, নতুন শিক্ষা নীতির নামে, শিক্ষা মাত্র মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য। এই ভাবে জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে চাইছে। তাই সরকার-পোষিত মিডিয়া ফ্রান্স, আমেরিকার প্রসঙ্গ আনে। সুইডেন, বেলারুশের কথা বলে না। যেখানে লকডাউন হয়ই নি। স্কুলও বন্ধ ছিল একমাসের কম। আনে না নিউজিল্যান্ডের কথা। যেখানে লকডাউন তুলে ছিল স্কুল খুলে। আসলে আমাদের পরিকল্পনাগুলো হয় শহরে বসে- উচ্চবিত্ত, শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের কথা ভেবে। খেটে খাওয়া নিম্নবিত্ত সমাজের কথা ভেবে নয়।

           করোনা সংক্রমণের হার সংবাদ-মাধ্যম সূত্রে জানছি। কিন্তু ঘিঞ্জি বস্তি অঞ্চলে বা গ্ৰামে-গঞ্জে কি গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে? গত জুন মাস থেকে সাংগঠনিক কাজে দক্ষিণবঙ্গের গ্ৰামাঞ্চলে লাগাতার ঘুরছি। শিশু-কিশোর-বৃদ্ধদের একসাথে মেলামেশা ও গল্প করতে দেখেছি। কই সেখানে তো সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি। শহরের বস্তি অঞ্চলগুলো, যাদের কোনো মতেই দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়, তাদের কি গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে? তাই সংক্রমণের যে ভয় দেখানো হচ্ছে, তা কতটা ঠিক? না, আড়ালে অন্য খেলা চলছে? “একদেশ এক পাঠক্রম”—এই জাতীয়তাবাদী মোড়কে আপনার শিশুর শিক্ষা আবৃত হয়ে যাচ্ছে না তো?

অভিনন্দন সহ

সম্পাদক, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্র।

#বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অর্ণব সরকার (9477236962) দ্বারা, 64/5/5 রাজা রামমোহন রায় রোড, কলকাতা-700008 থেকে প্রকাশিত#

Contact:

vosk.science@gmail.com // fb.com/centerforscience

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top